ইমাম আবু হানিফার নামে মিথ্যা বানোয়াট প্রতারণা

আসুন হানাফী মাযহাবীদের কিছু মিথ্যা,বানোয়াট বক্তব্য শুনি-

◉ ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ৫৫ বার হ্জ্জ্ব করেছেন।
◉ ইমাম আবু হানিফা (রহ.) আল্লাহকে ১০০ বার স্বপ্নে দেখেছেন।
◉ ৪০ বছর একটানা এশার ওযু দ্বারা ফজরের সালাত আদায় করেছেন।
◉ ৩০ বছর একটানা রোজা রেখেছেন। বছরের যেই পাঁচদিন রোজা রাখা হারাম, সেই পাঁচ দিন তিনি রোজা রাখেন নাই, তবে সেই ৫ দিনও তিনি কোন খাবার গ্রহণ করেন নাই।
.
■তাহক্বীকঃ
৪০ বছর একটানা এশার ওযু দ্বারা ফজরের সালাত আদায় করার কিচ্ছাকে যদি সত্যি ধরে নেই তবে তাঁকে স্ত্রী সহবাস দিনে করতে হয়েছে। কিন্তু আবার বলা হচ্ছে ৩০ বছর একটানা রোজা রেখেছেন। অথচ রোজা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস অসম্ভব! সুতরাং এই দুটি কিচ্ছা একটি অপরটির বিপরতী। একটি বক্তব্যকে সত্য ধরে নিলে অন্যটিকে মিথ্যা স্বীকার করতে-ই হবে।
.
মুলত এই বক্তব্যগুলো সব মিথ্যা বানোয়াট কথা। অনেকটা সোনাবানুর কিচ্ছার মতো। এরা তাদের মাযহাবের ইমামাকে বাড়াতে বাড়াতে কখন যে হযরত মুহাম্মদ  ﷺথেকেও উপরে তুলে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিযোগীতায় মেতে চলেছে তা তারা বুঝতেও পারছে না। তাই তো হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর সহীহ হাদীসের দাওয়াত তাদের পছন্দ হয়ে না। প্রত্যেক আমলের ক্ষেত্রে হানাফী মাযহাবের রেফারেন্স খোঁজা হয়, সহীহ হাদীস নয়। তাদের এসব কথা শুনলে মনে হয় যেন, কোরআন হাদীস নয়, হানাফী মাযহাবই আমাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় ধর্ম; হযরত মুহাম্মদ ﷺ নয়, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) -ই তাদের নবী!
.
আল্লাহ পাক এমন আলেম নামের জাহেলদের মিথ্যাচার আর বাড়াবাড়ি থেকে মুসলীম উম্মাহকে হেফাজাত করুন!

: ইমাম আবু হানিফা রহ. কাবা ঘরের ভিতরে ২ রাক’আত সালাত পড়লেন। ঐ সালাতে ডান পায়ে দাড়িয়ে ১৫ পারা কোরআন পড়েছেন। বাম পায়ে দাড়িয়ে বাকী ১৫ পারা পড়েছেন। মানে পুরো কোরআন খতম করেছেন মাত্র ২ রাক’আত সালাতে।
সোবহান আল্লাহ…! তাহ্বকীকঃ
১। হানাফী ফিকহের প্রায় প্রতিটি কিতাবে ১ পায়ে দাড়িয়ে সালাত আদায় করাকে মাকরুহ বলা হয়েছে। যার নামে এই মাযহাব সৃষ্টি সেই মাযহাবের স্রষ্টা (!) কি এই ফতোয়া জানতেন না? অবাক..!
.
২। রমাদান মাসে আমরা যে 3G গতিতে তারাবী সালাত পড়ি সেখানে প্রায় ২ পারা কোরআন পড়তে সময় লেগে যায় ১ ঘন্টা। সেই 3G/4G গতিতেও যদি তিনি সালাত আদায় করেন তবে তার সময় লাগবে প্রায় ১৫ ঘন্টা। এই সময়ের মধ্যে কি ফরয সালাতের সময় হয়নি? যদি হয়ে থাকে তাহলে কি ইমামে আজম আবু হানিফা রহ. সালাত ত্যাগকারী?
এটা কি তাঁর শানে চিন্তা করা যায়?
.
৩। ৩ দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা সহীহ হাদীস বিরোধী। ইমামে আজম আবু হানিফা রহ. কি ঐ সহীহ হাদীস সমূহ জানতেন না?
.
মুলত এগুলো সব অন্ধ মাযহাবীদের বানানো কিচ্ছা-গল্প। তাদের মাযহাবের ইমামকে বড় করতে হবে সবার থেকে তাই এই মিথ্যাচার।
.
হে আল্লাহ যারা ইমাম আবু হানিফা রহ. এর নামে মিথ্যাচার করে তাদেরকে তুমি হেদায়াত দাও এবং পথভ্রষ্ট আলেম থেকে মুসলিম সমাজকে রক্ষা করো।

★ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)-এর নামে মিথ্যা ফজিলতের বর্ননাঃ

""ইমাম আবু হানিফা রহঃ ত্রিশ বছর কিংবা চল্লিশ বছর কিংবা পন্চাশ বছর এশা ও ফজরের সালাত একই অযূতে পড়েছেন।তার সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে,ওযূর পানি ঝরার সময় তিনি বুঝতে পারতেন এর সাথে কোন পাপ ঝরে যাচেছ।উল্লেখ্য যে,ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া) এর অধীনে ফাজিল স্নাতক প্রথম বর্ষের আল-আক্বাঈদ বইয়ে আবু হানিফা রহঃ এর গুনাবলী সম্পর্কে বলা হয়েছে,তিনি একাধারে ৩০ বছর রোজা রেখেছেন এবং ৪০ বছর যাবত রাতে ঘুমাননি।ইবাদত বন্দেগীতে রজনী কাটিয়ে দিতেন।প্রতি রমজানে ৬১ বার কুরআন মাজীদ খতম করতেন।অনেক সময় এক রাকাতেই কুরআন মাজীদ এক খতম দিতেন।তিনি ৫৫ বার হজ্ব করেছেন।জীবনের শেষ হজ্বের সময় কা'বা শরীফে এভাবে দু 'রাকাত নামাজ পড়েন যে,প্রথম রাকাতে এক পা উঠিয়ে প্রথম অর্ধাংশ কুরআন মাজীদ পাঠ করেন।তারপর দ্বীতিয় রাকাতে অপর পা উঠিয়ে বাকি অর্ধাংশ কুরআন মাজীদ পাঠ করেন।যে স্থানের তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে,সেখানে ১০০০ বার কুরআন খতম করেছেন।তিনি ৯৯ বার আল্লাহকে স্বপ্নে দেখেছেন। ( রচনা ও সম্পাদনাঃমাওলানা মুহাম্মদ আবু ইউসুফ খান,আল-আকাঈদ আল -ইসলামিয়া ( ঢাকাঃ আল-বারাকা লাইব্রেরী, ৩৪, নর্থব্রুক হল রোড,বাংলাবাজার,ঢাকা ১১০০),পৃঃ ৪৫)।

তারা ইমাম আবু হানিফা (র) সম্মান বাড়াতে গিয়ে তাকে আরো ছোটো করেছে, আর একশ্রেনীর ভ্রান্ত আলেমগণ ইমাম আবু হানিফার (র) এর নামে এসব গাঁজাখুরি কিচ্ছা বানিয়ে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে খেলছে!
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এসকল পথভ্রষ্ট আলেম থেকে হেফাজত করুন।

 আমিন
(ভাষা সংযত করুন, খারাপ ভাষা হতে পারে জাহান্নামে যাবার কারণ ।

Comments

Popular posts from this blog

পীর কাকে বলে হাক্কানী পীর বনাম ভন্ড পীর

মুসলিম মাযহাব ছাডবে কেন