বিভিন্ন সালাতের নিয়ম

দুই রাকাত নামাজের নিয়মঃ

প্রথমে অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বেন না কারন তার সহীহ কোন দলীল নেই । মনে নামাজের নিয়্যত  করবে অন্তরে মুখে পডা বিদ,আত । এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে নারী_পুরুষের একই নিয়ম বুকের উপর বা নাভীর উপরে হাত বাঁধবে (বাম হাঁতের উপরে ডান হাত)প্রথমে সানা পড়বেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলাবেধীর-স্থিরভাবে রুকু ও দুই সিজদা করে উঠে দাঁড়াবে এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাঁধবেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোন সূরা মিলাবেসম্পূর্ণভাবে রুকু-সেজদা করবে এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবে। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবে। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে

তিন রাকাত নামাজের নিয়মঃ

প্রথমে অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বেমনে মনে নামাজের নিয়্যত করবে এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে  বুকের উপর বা নাভীর উপরে হাত বাঁধবে (বাম হাঁতের উপরে ডান হাত)প্রথমে সানা পড়বেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলাবেধীর-স্থিরভাবে রুকু ও দুই সিজদা করে উঠে দাঁড়াবে এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাঁধবেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোন সূরা মিলাবেপূর্বের ন্যায় রুকু সেজদা করে উঠে না দাঁড়িয়ে সোজা হয়ে বসবে (প্রথম বৈঠক), এবং তাশাহুদ পাঠ করবেআল্লাহু-আকবার বলে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবে এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। ফরজ নামাজ না হলে সূরা ফাতিহার পর আরেকটি সূরা মিলাবেবিতরের নামাজ হলে তৃতীয় রাকাতে রুকু সেজদার আগে পুনরায় একটি তাকবির দিয়ে হাত বাঁধবে এবং দোয়া কুনুত পাঠ করবে।সম্পূর্ণভাবে রুকু-সেজদা করবে এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবে। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবে। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে

চার রাকাত নামাজের নিয়মঃ

প্রথমে অজু করে পবিত্র হয়ে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়বেমনে মনে নামাজের নিয়্যত করবে এবং আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমার পরে বুকের উপর বা নাভীর উপরে হাত বাঁধবে (বাম হাঁতের উপরে ডান হাত)প্রথমে সানা পড়বেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং তারপরে অন্য একটি সূরা মিলাবেধীর-স্থিরভাবে রুকু ও দুই সিজদা করে উঠে দাঁড়াবে এবং পূর্বের ন্যায় হাত বাঁধবেসূরা ফাতিহা পড়বে এবং অন্য কোন সূরা মিলাবেপূর্বের ন্যায় রুকু সেজদা করে উঠে না দাঁড়িয়ে সোজা হয়ে বসবে (প্রথম বৈঠক), এবং তাশাহুদ পাঠ করবেআল্লাহু-আকবার বলে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবে এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। ফরজ নামাজ না হলে সূরা ফাতিহার পর আরেকটি সূরা মিলাবেরুকু সেজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত বাঁধবে। তৃতীয় রাকাতের নিয়মানুযায়ী সূরা পাঠ করবে।সম্পূর্ণভাবে রুকু-সেজদা করবে এবং উঠে না দাঁড়িয়ে বৈঠকে বসবে। বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করবে। অতঃপর ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

জানাযার নামাযের নিয়মঃ

মৃত ব্যাক্তিকে সামনে রেখে তার মাগফিরাত কামনার জন্য সকলে একত্রিত হয়ে যে দু’আ পড়া হয়, ইহাকে জানাযার নামাজ বলে । আদবের সহিত বিনয়ের সাথে দাঁড়াবে। তারপর নিয়ত করবে অন্তরে মুখে নয় ।

এই ভাবে নিয়তের পর ১ম তাকবীর বলবে, তারপর ছানা অথবা সূরা ফাতিহা পড়বে :

سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণ : সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুক।
অনুবাদ : হে আল্লাহ আমরা তোমার পবিত্রতার গুণগান করিতেছি। তোমার নাম মঙ্গলময় এবং তোমার সম্মান ও মর্যাদা অতি শ্রেষ্ঠ, তোমার জন্য প্রশংসা, তুমি ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই।

ছানার পর ২য় তাকবীর বলবে, তারপর দরুদে ইব্রাহীম পড়বে।

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ – اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

উচ্চারন : আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা- সাল্লাইতা আলা- ইব্রাহীমা ওয়া আলা- আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামী-দুম্মাজী-দ। আল্লাহুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা- ইব্রাহীমা ওয়া আলা- আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামী-দুম্মাজী-দ।
অনুবাদ : যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।

দরুদে ইব্রাহীমের পর ৩য় তাকবীর বলবে, তারপর মৃত ব্যক্তির জন্য দু’আ পড়বে।

اَلَّهُمَّ اغْفِرْلحَِيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَانَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الاِْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا َارْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলাম, ওয়া মান তাওয়াফ্ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান, বিরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমীন।
অনুবাদ : হে আল্লাহ্ আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অনুপস্থিত বালক ও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে ইসলামের হালতে জীবিত রাখিও। আর যাহাদিগকে মৃত্যু মুখে পতিত কর। তাহাদিগকে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করাইও।

মাইয়্যিত যদি নাবালক ছেলে হয় তবে নিচের দু’আ পড়বে।

اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَا فِعًا وَمُشَفَّعًا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাজ্ আল হুলানা ফারতাঁও ওয়াজ্ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরা, ওয়াজ্ আল হুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়া।
অনুবাদ : হে আল্লাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।

মাইয়্যিত যদি নাবালেগা মেয়ে হয় তবে নিচের দু’আ পড়বে।

اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهَا لَنَا شَا فِعًة وَمُشَفَّعةَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাজ্ আল হা-লানা ফারতাঁও ওয়াজ্ আল হা-লানা আজরাঁও ওয়া যুখরা, ওয়াজ্ আল হা-লানা শাফিআতাউ ওয়া মুশাফ্ফায়াহ্।
অনুবাদ : হে আল্লাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।

মৃত ব্যক্তির জন্য দু’আর পর ৪র্থ তাকবীর বলবে, তারপর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

ঈদের নামাজের নিয়মঃ

 সালাত আমরা সেভাবেই আদায় করি যেভাবে আমরা সাধারন দুই রাকাত সালাত আদায় করি একমাত্র তাকবীর এর কথা বাদ দিয়ে। ঈদের সালাতের বিস্তারিত সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেয়া হলঃ

ইমাম আযান বা ইকামাত ছাড়াই তাকবির আল-তাহরিমাহ দিয়ে সালাত শুরু করবেন। আপনি হাত কাধঁ বা কানের লতি বরাবর তুলবেন এবং হাত বাধবেন। তারপর ছানা পড়বেন। এরপর ইমাম ৩ বার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলবে্ন। ইমামের তাকবিরের সাথে সাথে আপনি প্রত্যেকবার-ই তুলবেন (সাথে সাথে নিচু গলায় তাকবির (আল্লাহু আকবার)বলবেন) এবং হাত না বেধেঁ ছেড়ে দেবেন। তবে ইমাম তৃতীয়বার তাকবির বলার পর আপনি হাত বাধঁবেন (যেভাবে আপনি সাধারনত ৫ ওয়াক্ত সালাতে বাধেন)।

এই তিন তাকবিরের পর ইমাম কুরআন তিলাওয়াত করবেন যা আপনি অতি মনোযোগ সহকারে শুনবেন। এরপর সাধারন সালাতের মতই সালাতের প্রথম রাকাত শেষ হবে।

সিজদা থেকে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য ওটার পর ইমাম কুরান তিলাওয়াত দিয়ে শুরু করবেন (সূরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা) আপনি শান্তভাবে ও মনোযোগ সহকারে তা শুনবেন। যখন ইমাম তিলাওয়াত শেষ করবেন তখন তিনি ৩ বার তাকবির বলবেন (এবার এই ৩ তাকবির রূকুতে যাওয়ার আগে বলবেন)। প্রত্যেক তাকবিরে আপনি আগের মতই হাত তুলবেন এবং "আল্লাহু আকবার" বলার পর হাত ছেড়ে দেবেন। এই ৩ তাকবির বলার পর ইমাম আরেকবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলবেন রূকুতে যাওয়ার জন্য। এই (৪র্থ) তাকবিরে আপনি হাত তুলবেন না। এবং "আল্লাহু আকবার" বলে রূকুতে চলে যাবেন। সালাতের বাকী অংশ সাধারন ৫ ওয়াক্ত সালাতের মতই শেষ করবেন।
 
জুম’আর সালাতের নিয়ম/ওয়াক্তঃ

অধিকাংশ আলেমের মতে, জুম’আ ও যোহরের সময় একই। যখন যোহরের শুরু হয় জুম’আও তখনই শুরু হয়। অর্থাৎ ঠিক দুপুরে সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিমে কিছুটা ঢলে পড়লে জুম’আর সময় শুরু হয় (বুখারীঃ ৪১৬৮)।

জুম’আর সালাতে মুসুল্লীর সংখ্যা

কমপক্ষে কতজন মুসুল্লী হলে জুম’আর সালাত আদায় করা যায় এ বিষয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখপূর্বক কোন হাদীস পাওয়া যায় না। তবে বিজ্ঞ আলেমদের মতে, ইমাম ব্যতীত কমপক্ষে ৩ জন হলেই যথেষ্ট। একজন খুৎবা দেবে, বাকী তিনজন শুনবে। ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রাঃ) এ অভিমতটি গ্রহন করেছেন। আর এটাই সর্বাধিক গ্রহনযোগ্য মত।

জুম’আ আদায়ের নুন্যতম এলাকা

যত ছোট গ্রামই হোক সেখানে জুম’আ পড়া জায়েয আছে। খলীফা উমর (রাঃ) বাহরাইনের অধিবাসীদের লিখেছেন, তোমরা যেখানেই থাক জুম’আ পড় (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা; বুখারী ৮৯৩, ইঃফাঃ ৮৯৩, আধুনিক ৮৪২)

ইবনে উমর (রাঃ) মক্কা মুকাররামা ও মদীনা মুনাওারার মধ্যবর্তী পথে ছোট ছোট জনপদগুলোতে মানুষকে জুম’আ পড়তে দেখেছেন। তিনি তাতে কোন আপত্তি করতেন না (মুসান্নাফে আঃ রাজ্জাক)।

অপরদিকে পাড়াগ্রামে জুম’আ হবে না মর্মে খলীফা আলী (রাঃ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে একটি হাদিস বর্ণনার প্রচলন এ দেশে আছে। আসলে এটি সহীহ হাদীস নয় (মাজাল্লাতুল বুহসিল ইসলামিয়া ১৬/৩৫২-৩৫৪, ২২/৭৫)।

উল্লেখ্য যে, কোন অমুসলিম দেশে পড়াশোনা বা চাকরীরত অবস্থায় সেখানে মসজিদ না থাকলে কোন একটি রুমে ৩ জন মিলে জুম’আ পড়লেও তা আদায় হয়ে যাবে (মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিকঃ ১৫/৮৫)।

জুম’আ যার উপর ফরজঃ

হুঁশ-জ্ঞান সম্পন্ন ও স্বাধীন প্রত্যেক বালেগ মুসলমান পুরুষদের উপর জুম’আ ফরজ। এ বিষয়ে সারকথা হচ্ছে, যার মধ্যে নিম্নে বর্ণিত শর্তগুলো একযোগে পাওয়া যায় তার উপর জুম’আ ফরজ।

১. মুসলমান হওয়া (কারণ ইসলাম গ্রহন ছাড়া কোন ইবাদতই কবুল হয় না)।

২. বালেগ হওয়া (তবে নাবালেগ শিশু জুম’আ পড়লে সওয়াব পাবে)।

৩. হুঁশ জ্ঞান থাকা (কারণ বেহুঁশ বা পাগলের কোন ইবাদত নেই)।

৪. পুরুষ হওয়া (মেয়েদের উপর জুম’আ ফরজ নয়, তবে পড়লে আদায় হবে)।

৫. স্বাধীন হওয়া (গোলাম বা ক্রীতদাস হলে জুম’আ ফরয হয় না)।

৬. মুকীম হওয়া (মুসাফির অবস্থায় জুম’আ ফরজ হয় না)।

৭. শরয়ী উযর না থাকা (অসুস্থ, ভয়ভীতি বা নিরাপত্তাহীনতায় না থাকা)।

● যাদের উপর জুম’আ ফরয নয় তারা যদি জুম’আ পড়ে তবে তা আদায় হয়ে যাবে। যেমন শিশু, মহিলা, রোগী বা উযর আছে এমন যে কেউ জুম’আ পড়লে তা আদায় হয়ে যাবে এবং এর সওয়াব ও পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে তাদের আর যোহর পড়তে হবে না। তবে মেয়েরা ইমাম হতে পারবে না, খুৎবা দিতে পারবে না।

● রাস্তায় কাদা থাকা, পথ পিচ্ছিল হওয়া ইত্যাদি কারণে কেউ জুম’আয় যেতে না পারলে এমতবস্থায় তার গুনাহ হবে না। তবে বাসায় যোহর পড়ে নেবে। (বুখারীঃ৯০১, ইঃফাঃ৮৫৫, আধুনিকঃ৮৪৮; মুসলিমঃ৬৯৯)

● যারা লোকালয়ের বাইরে বা সমুদ্রে এতটুকু দূরে কাজ করে যে, সেখান থেকে আযান শুনতে পায় না, তাদের উপর জুম’আ ফরজ নয়, তবে এসে জুম’আয় শরীক হতে পারলে সওয়াব পাবে। (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীনঃ১/৩৯৯)

● মুসাফির ব্যক্তি জুম’আর খুৎবা দিতে ও ইমামতি করতে পারবে। (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীনঃ৫/২৩)

● জুম’আ ফরজ ‘এমন’ ব্যক্তির জুম’আর দিনে সফরে বের হলে, পথিমধ্যে কোথাও জুম’আ পড়তে পারে- এমন নিশ্চয়তা থাকলে একদল আলেমের মতে, এ দিন সফর করা জায়েয আছে। আর যদি কোথাও জুম’আ না পাওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে এ দিন সফর করা উচিত নয়। তবে জুম’আর সালাত শেষ হওয়ার পর সফর করতে কোন নিষেধ নেই।

জুম’আ ও যোহরের মধ্যে পার্থক্যঃ

জুম’আ ও যোহরের মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য আছে-

(১) যোহর সকল বিবেক সম্পন্ন মুমিন নর-নারীর উপর ফরজ, আর জুম’আ সকলের উপর ফরজ নয়;

(২) যোহর হল মূল সালাত, আর জুম’আ হল যোহরের পরিবর্তে;

(৩) জুম’আর কিরা’আত প্রকাশ্যে আর যোহরের কিরা’আত চুপে চুপে;

(৪) জুম’আর ফরজ দুই রাকা’আত, আর যোহরের ফরজ চার রাকা’আত;

(৫) জুম’আয় খুৎবা আছে ।

জুমা আর নামাজের ফজিলতঃ

উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য জুম’আর দিনের ফযীলত সমূহ:

১) সূর্য উদিত হয় এমন দিনগুলোর মধ্যে জুম’আর দিন হল সর্বোত্তম দিন। এ দিনে যা কিছু ঘটেছিল তা হলঃ

(ক) এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল,

(খ) এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল,

(গ) একই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল [মুসলিমঃ৮৫৪],

(ঘ) একই দিনে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল,

(ঙ) এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল,

(চ) এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছিল [আবু দাউদঃ১০৪৬],

(ছ) এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে,

(জ) এই দিনেই কিয়ামত হবে,

(ঝ) এই দিনেই সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে [আবু দাউদঃ১০৪৭],

(ঞ) প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত ও সমুদ্র এই দিনটিকে ভয় করে। [ইবনে মাজাহঃ১০৮৪, ১০৮৫; মুয়াত্তাঃ৩৬৪]।

২) উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এটি একটি মহান দিন। এ জুম’আর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহন করে নিল। [বুখারী ৮৭৬, ইফা ৮৩২, আধুনিক ৮২৫; মুসলিমঃ ৮৫৫]

৩) জুম’আর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন। [ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮]�
৪) জুম’আর দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদা সম্পন্ন। (মুসনাদে আহমদঃ৩/৪৩০; ইবনে মাজাহঃ১০৮৪)

৫) জুম’আর দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হল জুম’আর দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত। [বুখারীঃ৯৩৫, ইফা ৮৮৮, আধুনিক ৮৮২; মুসলিমঃ৮৫২]

৬) জুম’আর রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি মারা যায় আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন। [তিরমিযীঃ১০৭৮]

৭) জান্নাতে প্রতি জুম’আর দিনে জান্নাতীদের হাট বসবে। জান্নাতী লোকেরা সেখানে প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হবেন। তখন সেখানে এমন মনমুগ্ধকর হাওয়া বইবে, যে হাওয়ায় জান্নাতীদের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরা তা দেখে অভিভূত হবে। অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে। [মুসলিমঃ২৮৩৩, ৭১/৭৫৩]

৮) যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সুরা কাহফ পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেবেন। [জামেউস সাগীরঃ৬৪৭০]

৯) যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সুরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে। [মুসলিম]

১০) প্রত্যেক সপ্তাহে জুম’আর দিন আল্লাহ তায়ালা বেহেশতী বান্দাদের দর্শন দেবেন। [সহীহুত তারগীব]

১১) এই দিনে দান খয়রাত করার সওয়াব অন্য দিনের চেয়ে বেশী হয়। ইবনুল কায়্যিম বলেছেন, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের দানের সওয়াব যেমন বেশী তেমনি শুক্রবারের দান খয়রাত অন্য দিনের তুলনায় বেশী। [যাদুল মা’আদ]

১২) ইবনুল কায়্যিম আরও বলেছেন যে, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের মর্যাদা যেমন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় জুম’আ বারের মর্যাদা ঠিক তেমন। তাছাড়া রমজানের কদরের রাতে যেমন ভাবে দোয়া কবুল হয়, ঠিক তেমনি শুক্রবারের সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণেও দোয়া কবুল হয়। [যাদুল মা’আদঃ১/৩৯৮]

জুম’আর নামাজের ফযীলত:

জুম’আর নামাজের ফযীলত ও তা আদায়কারীদের জন্য ঘোষিত পুরষ্কার

১। কুরবানী করার সমান সওয়াব অর্জিত হয়ঃ

দিনে আগে ভাগে মসজিদে গেলে দান-খয়রাত বা পশু কুরবানী করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন,

“যে ব্যাক্তি জু’আর দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানী করল, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল, তৃতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ছাগল কুরবানী করল। অতঃপর চতুর্থ সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে গেল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। আর পঞ্চম সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।” (বুখারীঃ ৮৮১, ইফা ৮৩৭, আধুনিক ৮৩০)
২। মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে ফেরেশতারা অগ্রগামীদের নাম তালিকাভুক্ত করেনঃ
জুম’আর সালাতে কারা অগ্রগামী, ফেরেশতারা এর তালিকা তৈরি করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“জুম’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতা এসে হাজির হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সর্বাগ্রে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকে। প্রথম ভাগে যারা মসজিদে ঢুকেন তাদের জন্য উট, দ্বিতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য গরু, তৃতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য ছাগল, চতুর্থবারে যারা আসেন তাদের জন্য মুরগী, ও সর্বশেষ পঞ্চমবারে যারা আগমন করেন তাদে�

 ৩। খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও ইমাম থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আবু দাউদঃ ১১০৮)


জুমা'আর দিনের আদবঃ

১। জুম’আর দিন গোসল করা। যাদের উপর জুম’আ ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ) ওয়াজিব করেছেন(বুখারীঃ ৮৭৭, ৮৭৮, ৮৮০, ৮৯৭, ৮৯৮) । পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসাবে সেদিন নখ ও চুল কাটা একটি ভাল কাজ।

২। জুম’আর সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮০)

৩। মিস্ওয়াক করা। (ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮, বুখারীঃ৮৮৭, ইঃফাঃ৮৪৩)

৪। গায়ে তেল ব্যবহার করা। (বুখারীঃ৮৮৩)

৫। উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা। (ইবনে মাজাহঃ১০৯৭)

৬। মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। (তিরমিযীঃ৫০৯, ইবনে মাজাহঃ১১৩৬)

৭। মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারীঃ ৯৩৪, মুসলিমঃ৮৫৭, আবু দাউদঃ১১১৩, আহমাদঃ১/২৩০)

৮। আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া। (বুখারীঃ৮৮১, মুসলিমঃ৮৫০)

৯। পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন। (আবু দাউদঃ ৩৪৫)

১০। জুম’আর দিন ফজরের নামাজে ১ম রাক’আতে সূরা সাজদা (সূরা নং-৩২) আর ২য় রাকা’আতে সূরা ইনসান(দাহর)(সূরা নং-৭৬) পড়া। (বুখারীঃ৮৯১, মুসলিমঃ৮৭৯)

১১। সূরা জুম’আ ও সূরা মুনাফিকুন দিয়ে জুম’আর সালাত আদায় করা। অথবা সূরা আলা ও সূরা গাশিয়া দিয়ে জুম’আ আদায় করা। (মুসলিমঃ৮৭৭, ৮৭৮)

১২। জুম’আর দিন ও জুম’আর রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ। (আবু দাউদঃ ১০৪৭)

১৩। এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।। (বুখারীঃ ৯৩৫)

১৪। মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। (বুখারীঃ৯১০, ৮৮৩)

১৫। মুসুল্লীদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা। (আবু দাউদঃ ৩৪৩, ৩৪৭)

১৬। কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। (বুখারীঃ৯১১, মুসলিমঃ২১৭৭, ২১৭৮)

১৭। খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা। (বুখারীঃ ৯৩০)

১৮। জুম’আর দিন জুম’আর পূর্বে মসজিদে জিকর বা কোন শিক্ষামুলক হালকা না করা। অর্থাৎ ভাগ ভাগ হয়ে, গোল গোল হয়ে না বসা, যদিও এটা কোন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হোক না কেন। (আবু দাউদঃ ১০৮৯)

১৯। কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। (নাসায়ীঃ ৭১৪, বুখারীঃ ৯৩৪)

২০। মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা। (বুখারীঃ ৮৫৩)

২১। ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা বদল করে বসা। (আবু দাউদঃ ১১১৯)

২২। ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই

২৪। জুম’আর দিন সূরা কাহফ পড়া। এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। (হাকেমঃ ২/৩৬৮, বায়হাকীঃ ৩/২৪৯)

২৫। জুম’আর আযান দেওয়া। অর্থাৎ ইমাম মিম্বরে বসার পর যে আযান দেওয়া হয় তা।(বুখারীঃ ৯১২)

২৬।জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা। (বুখারীঃ ১৮২, মুসলিমঃ ৮৮১, আবু দাউদঃ ১১৩০)

২৭। উযর ছাড়া একই গ্রাম ও মহল্লায় একাধিক জুম’আ চালু না করা। আর উযর হল এলাকাটি খুব বড় হওয়া, বা প্রচুর জনবসতি থাকা, বা মসজিদ দূরে হওয়া, বা মসজিদে জায়গা না পাওয়া, বা কোন ফিতনা ফাসাদের ভয় থাকা। (মুগনি লিবনি কুদামাঃ ৩/২১২, ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহঃ ২৪/২০৮)

২৮। ওজু ভেঙ্গে গেলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া। অতঃপর আবার ওজু করে মসজিদে প্রবেশ করা। (আবু দাউদঃ ১১১৪)

২৯। একান্ত উযর না থাকলে দুই পিলারে মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় সালাত আদায় না করা। (হাকেমঃ ১/১২৮)

৩০। সালাতের জন্য কোন একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই সালাত আদায় করা (আবু দাউদঃ৮৬২) । অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল করে না রাখা বরং যে আগে আসবে সেই আগে বসবে।

৩১। কোন নামাজীর সামনে দিয়ে না হাঁটা অর্থাৎ মুসুল্লী ও সুতরার মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে না হাঁটা। (বুখারীঃ৫১০)

৩২। এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদঃ ১৩৩২)

৩৩। পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযীলত অন্তরে জাগরূক রাখা।

৩৪। হাঁটার আদব মেনে মসজিদে গমন করা।

৩৫। খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ। (বুখারীঃ ১০২৯, মুসলিমঃ ৮৯৭)

৩৬। হানাফী আলেমগন বলেছেন যে, ভিড় প্রচণ্ড হলে সামনের মুসুল্লীর পিঠের উপর সিজদা দেওয়া জায়েজ (আহমাদঃ১/৩২) । দরকার হলে পায়ের উপর ও দিতে পারে (আর রাউদুল মুরবী)

৩৭। যেখানে জুম’আর ফরজ আদায় করেছে, উত্তম হল ঐ একই স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন কথা না বলে এখান থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায় করা। (মুসলিমঃ ৭১০, বুখারীঃ ৮৪৮)

৩৮। ইমাম সাহেব মিম্বরে এসে হাজির হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা- ইস্তিগফার ও কুরআন তিলাওয়াতে রত থাকা।

 জুম’আর নামাজের রাকা'ত সমূহ

জুম’আর নামাজে দুই রাকা'ত ফরজ, যা ইমামের সাথে আদায় করতে হয়।

অধিকাংশ আলেমদের মতে, জুম'আর ফরজের পূর্বে চার রাকা'ত কাবলাল জুম'আ এবং ফরজের পরে চার রাকা'ত বা'দাল জুম'আর সুন্নত নামাজ আদায় করতে হয়। এছাড়া মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকা'ত দুখলুল মসজিদ ও দুই রাকা'ত তাহিয়াতুল ওযুর মোস্তাহাব নামাজও উৎসাহিত করা হয়।

অর্থাৎ জুম'আর নামাজের বিবরণীতে বলা যায়ঃ

● মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত তাহিয়াতুল ওযু ও দুই রাকা'ত দুখলুল মসজিদের মোস্তাহাব নামাজ আদায় করবে (ঐচ্ছিক)

● চার রাকা'ত কাবলাল জুম'আর সুন্নত নামাজ একাকী আদায় করবে।

● ইমামের খুৎবা পাঠ মনোযোগ দিয়ে শুনবে।

● ইমামের সাথে দুই রাকা'ত জুম'আর ফরজ নামাজ আদায় করবে।

● ফরজ নামাজের পর তাৎক্ষণিকভাবে মসজিদ ত্যাগ করবে না, বরং চার রাকাত বা'দাল জুম'আর সুন্নত নামাজ একাকী আদায় করবে।

জুমা'আর জরুরী বিষয়ঃ

প্রশ্নঃ জুম’আর সালাত পড়া অবস্থায় যদি কোন মুক্তাদির ওযু ছুটে যায় তখন কি করবে?

উত্তর- মসজিদ থেকে বের হয়ে যাবে (এমন ভঙ্গীতে যেন নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে)। নতুন ভাবে ওযু করে ফিরে এসে যদি দ্বিতীয় রাকআতের রুকু পাওয়া যায় তাহলে এক রাকআত পাওয়া গেল বলে গন্য হবে। অতঃপর ইমামের সালাম ফিরানোর পর দাঁড়িয়ে আরেক রাকআত নিজে নিজে পড়ে নেবে। আর যদি দ্বিতীয় রাকাআতের রুকু না পায়, সিজদা বা তাশাহুদের বৈঠকে শরীক হয় তাহলে জুম’আ পেল না। সেক্ষেত্রে সে যোহরের নিয়ত করে (“নিয়ত পড়ে না”) চার রাকআত আদায় করবে।

প্রশ্নঃ নামাজরত অবস্থায় যদি ইমামের ওযু ছুটে যায় তাহলে তিনি কি করবেন?

উত্তর- পেছন থেকে একজনকে টেনে এনে ইমামের জায়গায় দাঁড় করিয়ে ওযু করতে চলে যাবেন। ওযু শেষে পূর্বের নিয়মে বাকি নামাজ আদায় করবেন।

প্রশ্নঃ ইমাম যদি বিনা অযুতে সালাত আদায়ের পর মনে হয় যে, তার ওযু ছিল না া ওজু ছুটে গিয়েছিল তখন কি হবে?

উত্তর- মুক্তাদীদের সালাত আদায় হয়ে যাবে। তবে ইমাম সাহেব যোহরের ফরজের নিয়তে একা চার রাকআত পড়ে নেবেন।

প্রশ্নঃ ঈদ ও জুম’আ একই দিনে হলে জুম’আ পড়ার হুকুম কি?

উত্তর- এমন হলে যার ইচ্ছা সেদিন জুম’আ পড়বে। আর না পড়লে গুনাহ হবে না। তবে জুম’আ না পড়লে যোহরের সালাত আদায় করতে হবে। উল্লেখ্য যে, জুম’আর দিন ঈদ হলে ইমামের জন্য জুম’আর সালাত আদায় করা বাধ্যতামূলক।

প্রশ্নঃ মহিলাদের জুম’আয় শরীক হওয়া কি যায়েজ আছে?

উত্তর- জুম’আয় অংশ গ্রহন মেয়েদের জন্য ফরজ নয়। তবে কোন নিষেধ ও নেই। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জামানায় মুহাজির মহিলাগণ নবীজি (সাঃ) এর পেছনে জুম’আর সালাত আদায় করতেন।

জুম’আয় শরীক হওয়ার মধ্যে মেয়েদের জন্য কল্যানের ভাগই বেশী। কারণ দ্বীন শিক্ষার সুযোগ সুবিধা মেয়েদের জন্য ততটুকু নেই যতটুকু পুরুষদের আছে। কলেজ ইউনিভার্সিটি শিক্ষায় তারা অগ্রসর হলেও কুরআন ও হাদীসের শিক্ষায় তারা অনেক পেছনে। কমপক্ষে সাপ্তাহিক একটি খুৎবায় তারা ধর্মীও নিরক্ষরতা অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পারে। দ্বীনী ইলমের আলো তারা পেলে পারিবারিক জীবন আরও সুন্দর এবং ছেলে মেয়েদেরকে দ্বীনী পথে মানুষ করার কাজ সহজ হবে। সে লক্ষ্যে নারীদের মসজিদে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া ও মসজিদে তাদের আলাদা জায়গা রাখা কর্তৃপক্ষের জন্য একটি মহৎ কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এ হিসাবে তারা সওয়াবও পাদেন, ইনশাআল্লাহ। শুধু একটা শর্তযে, মহিলারা পূর্ণ পর্দার সাথে ও সর্বাঙ্গীণ শালীনতা বজায় রেখে মসজিদে গমনাগমন করবেন।

চাশতের নামাজ ঃ

বুরাইদা (রা)রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) বলেছেন, “মানুষের শরীরে ৩৬০ টি জোড় রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হল প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে সদাকা করা।” সাহাবায়ে কেরাম (রা) বললেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?” তিনি (সা) বললেন, “মসজিদে কোথাও কারোর থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোন ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকা’আত সালাতই এর জন্য যথেষ্ট।” [আবু দাউদ; কিতাবুল ‘আদাব’, অধ্যায়ঃ ৪১, হাদীস নং:৫২২২]

উপরিউক্ত হাদীসটি মুলত চাশতের সালাত বা সালাতুদ্‌ দুহা’র অপরিসীম গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই তুলে ধরে। এর থেকে আরো বোঝা যায় যে,চাশতের সালাত তথা সালাতুদ্‌ দুহা ৩৬০ টি সাদাকার সমতুল্য।

আবু হোরাইরা (রা) বলেন,

“আমার বন্ধু [মুহাম্মাদ (সা)] আমাকে তিনটি বিষয় আমল করার উপদেশ দিয়েছেনঃ প্রতি মাসের প্রথম তিন দিন রোজা রাখা; চাশতের সালাত (সালাতুদ্‌ দুহা) আদায় করা এবং ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে বিতরের সালাত আদায় করা।" [সহীহ্‌ আল বুখারী; “তাহাজ্জুদ” অনুচ্ছেদ, অধ্যায়ঃ ২, হাদীস নং:২৭৪ এবং সহীহ্‌ মুসলিম; কিতাবুস্‌ সালাত, অধ্যায়ঃ ৪, হাদীস নং:১৫৬০]

চাশতের সালাত (সালাতুদ্‌ দুহা) একটি উপহার স্বরূপ এবং যে এই উপহার পাওয়ার আশা করে,সে যেন এই সালাত আদায় করে। তবে এই সালাত আদায় না করলে কেউ গুনাহ্‌গার হবেনা।

আবু সাঈদ (রা) হতে বর্ণিত,

“রাসূল (সা) ততক্ষন পর্যন্ত চাশতের সালাত পড়তে থাকতেন, যতক্ষনে আমরা ভাবতে শুরু করাতাম যে তিনি (সা) এই সালাত আর কখনো বাদ দেবেন না। আবার যখন এই সালাত আদায় করা বন্ধ রাখতেন, আমরা ভাবতাম হয়ত তিনি এই সালাত আর কখনই আদায় করবেন না।" (তিরমিযি)

চাশতের সালাতের রাকা’আতের সংখ্যা ২, ৪, ৮, ১২ পর্যন্ত পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে আল্লাহ্‌র রাসূল (সা) আলী (রা) এর বোন উম্মে হানী (রা) এর গৃহে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকা’আত পড়েছিলেন। সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু’ এবং সিজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকা’আত অন্তর সালাম ফিরিয়ে ছিলেন।[সহীহ্‌ আল বুখারী; “সালাত সংক্ষিপ্তকরন” অনুচ্ছেদ, অধ্যায়ঃ ২, হাদীস নং:২০৭]

“ইশরাক্ক” এর সালাতই হল “চাশতের সালাত” বা “সালাতুদ্‌ দুহা”। “দুহা” শব্দের অর্থ প্রভাত সূর্যের ঔজ্জল্য, যা সূর্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়। এই সালাত প্রথম প্রহরের পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্বেই পড়া হয় বলে একে “সালাতুদ দুহা” বা “চাশতের সালাত” বলা হয়। তবে প্রথম প্রহরের শুরুতে পড়লে তাকে “সালাতুল ইশরাক্ক” বলে। এই সালাত বাড়ীতে পড়া মুস্তাহাব। এটি সর্বদা পড়া এবং আবশ্যিক গণ্য করা ঠিক নয়। কেননা, রাসূল (সা) এই সালাত কখনো পড়তেন, আবার কখনো ছেড়ে দিতেন। উল্লেখ্য যে, এই সালাত “সালাতুল আউয়াবীন” নামেও পরিচিত।

শেইখ ইবন বাজ্‌ (র) বলেছেন,
“ইশরাক্ক সালাত শুরু থেকেই চাশতের সালাত হিসেব আদায় হয়ে আসছে।” [ মাজমূ’ ফাতাওয়াহ্‌ আল শেইখ ইবন বাজ্‌, ১১/৪০১ ]

চাশতের সালাতের সময় হচ্ছে, সূর্য একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় উঠার পর থেকে শুরু করে যোহর সালাতের ঠিক পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত।শেইখ ইবন ঊসাইমীন (র) এর মতে,
" চাশতের সালাত আদায়ের সময় হল সূর্য উঠার ১৫ মিনিট পর থেকে শুরু করে যোহর সালাতের ১০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত।" [ আল-শারহ্‌ আল-মুম্‌তি, ৪/১২২ ]

অতএব, এই পুরো সময়টাই হচ্ছে চাশতের সালাত বা সালাতুদ্‌ দুহা এর সময়।সূর্যের তাপ যখন প্রখর হতে শুরু করে তখন এই সালাত আদায় করা উত্তম। কেননা,নবী কারীম (সা) বলেছেন,“এই সালাত (চাশতের সালাত) আদায়ের উত্তম সময় হচ্ছে তখন, যখন সূর্যের তাপ এতোটা প্রখর যে, সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক উটও সেই তাপ অনুভব করতে পারে।” [সহীহ্‌ মুসলিম; কিতাবুস্‌ সালাত, অধ্যায়ঃ ৪, হাদীস নং:১৬৩০]শেইখ ইবন বাজ্ঃ মাজমূ’ ফাতাওয়াহ্‌, ১১/৩৯৫

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন দিনের এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ, দিনের চার ভাগের একভাগ পার হয় তখন এই সালাত আদায় করা উত্তম। কাজেই, চাশতের সালাত বা সালাতুদ্‌ দুহা আদায় করার উত্তম সময়টি হচ্ছে সূর্যোদয় এবং যোহর সালাতের মধ্যবর্তী সময়টা।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মঃ

সুন্নত নামাজগুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদ অন্যতম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে মুসলমানরা আবশ্যক হিসেবে এ নামাজ আদায় করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর তাহাজ্জুদ ফরজ ছিল। সাহাবায়ে কেরামও এ নামাজ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করতেন। এ নামাজে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রবৃদ্ধি ও প্রশান্তি লাভ হয়। গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে এ নামাজ আদায় করা হয় বিধায় একে তাহাজ্জুদ বলে অভিহিত করা হয়। তাহাজ্জুদ নফল পর্যায়ের সুন্নত। যা আমল করতে না পারলে কোনো গোনাহ নেই।
এ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। পবিত্র কোরআনে তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য বিশেষভাবে তাগিদ করা হয়েছে। উম্মতকে যেহেতু রাসুলের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেহেতু তাহাজ্জুদের এ তাগিদ পরোক্ষভাবে সমগ্র উম্মতের জন্য করা হয়েছে। এ মর্মে ইরশাদ হয়েছে—‘আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ আদায় করতে থাকুন। এটা আপনার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পাওনা। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে মাকামে মাহমুদ তথা প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ৭৯)
রমজানের চাহিদা তাকওয়া সৃষ্টির মাধ্যমে সুন্দর পৃথিবী উপহার দেয়া। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে তাকওয়ার পথ সবচেয়ে বেশি সুপ্রসন্ন হয়। এজন্য যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদের আমল করে, কোরআনে তাদের মুহসিন ও মুত্তাকি নামে অভিহিত করে তাদের আল্লাহর রহমত ও পরকালে চিরন্তন সুখ-সম্পদের অধিকারী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তারা রাতের অল্প অংশেই ঘুমাত এবং শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনা করত।’
মহানবী (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজকে সবচেয়ে উত্কৃষ্ট নামাজ বলে ঘোষণা করেছেন, যা মুসলিম শরিফের সুস্পষ্ট বর্ণনায় রয়েছে। তিনি মদিনায় আগমনের পর তাঁর প্রথম ভাষণেই সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে রাত জাগরণের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘হে লোকসব! ইসলামের প্রচার ও প্রসার কর, মানুষকে আহার দান কর, আত্মীয়তা অটুট রাখ, আর যখন মানুষ রাতে ঘুমিয়ে থাকবে তখন তোমরা নামাজ আদায় করতে থাকবে। তবেই তোমরা সফল হবে, নিরাপদে জান্নাতে যেতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাহাজ্জুদ সালাতের ব্যবস্থা কর, এটা নেক লোকের স্বভাব, এটা তোমাদের আল্লাহর নৈকট্য দান করবে, গোনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে, আর শরীর থেকে রোগ দূর করবে।’ (মুসলিম)
তাহাজ্জুদ সালাত দুই রাকাত থেকে বার রাকাত পর্যন্ত পড়ার প্রচলন রয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘হজরত নবী করিম (সা.) রমজান এবং রমজানের বাইরে আট রাকাতের বেশি কিয়াম করতেন না।’ হাদিসের ব্যাখ্যাকাররা এই বর্ণনার ব্যাখ্যায় কিয়াম বলতে তাহাজ্জুদের নামাজকেই বুঝিয়েছেন। নবী করিম (সা.) এই আট রাকাত সব সময় শেষ রাতে আদায় করতেন। এটি ‘কিয়ামুল লাইল’ নামে প্রচলিত রয়েছে এবং আল্লাহওয়ালাদের অনেকেই রমজানে ‘কিয়ামুল লাইল’ জামাতের সঙ্গে আদায় করে থাকেন।
তাই তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য শেষ রাতে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। হঠাত্ করে গভীর রাতে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা নিতান্তই কঠিন কাজ। তবে বছরের এগারো মাস শেষ রাতে জেগে তাহাজ্জুদ পড়া কষ্টকর হলেও রমজানে এটি মোটেও কঠিন নয়। রমজান মাসে যেহেতু শেষ রাতে সাহরি খাওয়ার জন্য জাগতে হয়, তখন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার একটি সুবর্ণ সুযোগ চলে আসে। এ রমজানে অভ্যস্ত হয়ে সারা বছর তাহাজ্জুদের আমল জারি রাখা সম্ভব। এ সুযোগ কাজে লাগানোর বিকল্প নেই;

সালাতুল তাসবীহঃ

।হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন, রাসুল(সাঃ) হযরত ইবনে আব্বাস(রাঃ) কে বলেন, “হে আব্বাস, আমার চাচা আমি কি আপনাকে একটি দান বা বকশিশ দিব, আপনার সামনে একটি তফফা পেশ করব, আমি কি আপনাকে এমন একটি আমল বলে দিব যা পালন করলে আপনি ১০ টি উপকার লাভ করবেন অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা আপনার অতিত- ভবিষ্যতের, নতুন-পুরাতন, ভুলে বা জেনেশুনে, ছোট – বড়, গোপনে বা প্রকাশে করা সকল গুনাহ এ মাফ করে দিবেন।সেই আমল হল আপনি ৪রাকাত সালাতুল তাসবিহ আদায় করবেন। যদি আপনার দ্বারা সম্ভব হয় তবে প্রতিদিন একবার এই নামাজ পরবেন, যদি প্রতিদিন পরতে না পারেন তবে প্রত্যেক জুমার দিন, আর সেটাও সম্ভব না হলে বছরে একবার এই নামাজ পরবেন। আর সেটাও সম্ভব না হলে জীবনে একবার হলেও পরে নেবেন”।

সালাতুল তাসবিহ পড়ার নিয়ম – হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক(রাঃ) ও অন্যান্য ওলামা হতে এই নামাজের ফজিলত নকল করা হয়েছে এবং তাদের নিকট হতে এই তরিকা বর্ণনা করা হয়েছে- “ছানা পড়ার পর এই কালেমা গুলি ১৫ বার – সুবহানাল্লহি ওআল হামদুলিল্লাহি ওআলা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর পরবেন, অতঃপর আউজুবিল্লাহ, বিছমিল্লাহ, সুরা ফাতিহা ও অন্য সুরা মিলানোর পর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে ১০বার পরবেন, রুকুতে গিয়ে ১০বার পরবেন, রুকু থেকে উঠে ১০বার, সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর ১০ বার,বসে ১০ বার এবং আবার সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর ১০ বার পরবেন, এভাবে ৭৫ বার পড়া হয়ে গেল, তারপর দাড়িয়ে সুরা ফাতিহা পড়ার পূর্বে ১৫ বার পরে পূর্বের নিয়মে পরে হবে। যদি কোন জায়গায় সংখ্যা কম হয়ে যায় বা ভুলে যাওয়া হয় তবে পরব।

মাসবুক নামাজঃ

জামাতে নামায শুরু হবার পর কোন ব্যক্তি যদি ইমামের সাথে কোন রাকাত পড়তে না পারে (বিলম্বে মসজিদে পৌঁছার দরুন বা অন্য যে কোন কারণে) তবে সেই ব্যক্তি শরীয়তের ভাষায় মাসবুক । কোন রাকাতের রুকু পেলেই সেই রাকাত পেয়েছে বলে গণ্য হবে ।



১. ইমামের সাথে সে সালাম ফিরাবে না । ইমাম প্রথম সালাম সম্পূর্ণ করার পর সে দাড়িয়ে যাবে ।

২. এরপর মাসবুক তার নামাযের যতটুকু বাকি আছে তা সম্পূর্ণ করে তাশাহুদ, দরুদ, দুআ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে সাধারণ ভাবে নামায শেষ করবে ।

৩. কিরাআত পড়ার ব্যাপারে মাসবুক তার যে কয় রাকাত বাকি আছে তা অনুসরণ করবে । এক রাকাত বাকি থাকলে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়বে । দুই রাকাত বাকি থাকলে উভয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও আপর সূরা মিলিয়ে পড়বে । তিন রাকাত বাকি থাকলে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অপর সূরা মিলাবে কিন্তু তৃতীয় ছুটে যাওয়া রাকাতে কেবল সূরা ফাতিহা পড়বে ।

৪. বৈঠকের ব্যাপারে মাসবুক ইমামসহ যে কয় রাকাত নামায পড়েছে তা হিসেব করে বৈঠকে যাবে । প্রতি জোড় রাকাত শেষে বৈঠকে বসতে হয় । তাই যে কেবল এক রাকাত পেল ইমামের সাথে সে ইমামের নামায শেষ করার পর দাড়িয়ে নিজে এক রাকাত পড়ে সেজদা সম্পন্ন করার পর বসে তাশাহুদ পড়বে কারণ এটা তার নামাযের দ্বিতীয় রাকাত । এরপর সাধারণ ভাবে নামায শেষ করব।

তারাবী হ নামাজের নিয়মঃ

 তারাবী নামাজের  হুকুম রমজান মাসের এশার নামাজের পর ২০ রাকায়াত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ নামাজকে তারাবীহ নামাজ বলা হয়। তারাবী শব্দটি আরবী । তারাবীহাহ্ তার বহুবচন, যার অর্থ ক্ষনিক বিশ্রাম। রমজানের এই নামাজে প্রতি ৪ রাকায়াতের পরে কিছু সময় অর্থাৎ ৪ রাকায়াত নামাজের সম পরিমান সময় বিলম্ব ও বিশ্রামের নিয়ম থাকায় এ নামাজে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে ।
তারাবীহ নামাজের ফজিলতঃরাসূল (সাঃ) বলেন, "(হে আমার উম্মতগন), তোমরা জেনে রেখ আল্লাহ তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন এবং উহার রাত্রে তারাবীহের নামাজ সুন্নাত করেছেন। অতএব, যে ব্যক্তি খালেস নিয়তে ঈমানের সাথে কেবল সোয়াবের আশায় এ মাসে দিনের বেলায় রীতিমত রোজা রাখবে এবং রাত্রিতে রীতিমত তারাবীহের নামাজ পড়বে তার বিগত সব সগীরা গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে।" অতএব, এ পবিত্র মাসে অধিক নেকী সঞ্চ্য করে লওয়া উচিৎ। এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমান নেকী পাওয়া যায়।
তারাবীহ নামাজের সময়ঃযে রাতে রমজানের চাঁদ দেখা যাবে সে রাত থেকে তারাবীহ নামাজ শুরু করতে হবে। ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেলে তারাবীহ বন্ধ করতে হবে। তারাবী নামাজের সময় এশার নামাজের পর থেকে শুরু হয় এবং ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত থাকে । যদি কী এশার নামাজের পূর্বে তারাবী পড়ে তাহলে তারাবী হবে না। (দুররুল মুখতার)
তারাবীহ নামাজের জামায়াতঃরাসুল (সাঃ) রমজানে তিন রাত ২৩, ২৫ এবং ২৭ শে রাত তারাবীহ নামাজ জামায়াতে পড়িয়েছিলেন। তারপর তিনি যখন সাহাবীদের মধ্যে বিরাট উৎসাহ উদ্দীপনা ও অনুরাগ দেখলেন তখন মসজিদে এলেন না। সাহাবাগন তখন তাঁ দরজায় আওয়াজ দিতে লাগলেন। তখন নবীজি বললেন, আল্লাহ তোমাদের উৎসাহ উদ্দীপনায় আরও বরকত দিন । আমি এ আশংকায় মসজিদে যাইনি যে, এ নামাজ তোমাদের উপর ফরজ হয়ে না যায় এবং সর্বদা তোমরা তা পালন করতে না পার। কারণ, নফল নামাজ ঘরে পড়াতে বেশী সওয়াব ও বরকতের জারণ হয় (বুখারী)।
এ হাদিস থেকে প্রমানিত হয় যে, রাসূল (সাঃ) ৩ রাত জামায়াতের পরে দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) রীতিমত জামায়াত কায়েম করেন এবং সাহাবায়ে কিরাম তা মেনে নেন। পরবর্তীকালে কোন খলিফাই এ সুন্নতের বিরোধিতা করেননি। এ জন্য আলেম সমাজ এ নামাজকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া বলেছেন


তারাবীহ নামাজের দোয়াঃ

তারাবীহ নামাজে প্রতি চার রাকাত অন্তর অন্তর বসে নিম্নলিখিত দোয়াটি মনে মনে পাঠ করবেঃ

سُبْحَانَ ذِى الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوْتِ سُبْحَانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظَمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ، سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَىِّ الَذِيْ لَا يَمُوْتٌ، سُبُّوْحٌ قُدُوْسٌ رَّبُّنَا وَرَبُّ الْمَلَاءِكَةِ وَلرُوْحِ، اللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ، يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ-

 সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা যিল ইজ্জাতি, ওয়াল আজমাতে, ওয়াল হায়বাতি,ওয়াল কুদরাতি, ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়া জাবারুত। সুবহানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা, সুববুহুন ক্কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার রূহ ।

 পবিত্রতে ঘোষণা করছি তাঁর, যিনি ইহজগত, ফেরেশতা জগতের প্রভু সেই আল্লাহর মহিমা বর্ণনা করছি যিনি মহিমাময় বিরাট, ভীতিপূর্ণ, শক্তিময়, গৌরবময় এবং বভত্তর। আমি সে প্রতিপালকের গুনগান করছি, যিনি চিরঞ্জীব, যিনি কখনও নিদ্রা যান না এবং যাঁর কখনও মৃত্যু ঘটে না। পুতঃপবিত্র তিনি। তিনি আমাদের পালনকর্তা, ফেরেশতাকুল এবং আত্মাসমূহের পালনকর্তা। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমরা আপনার কাছে বেহেশত চাচ্ছি এবং দোযখ থেকে মুক্তি চাচ্ছি ।

 তারাবীহ নামাজের মাসয়ালাঃ


০২।    তারাবীহ নামাজের পর বেতেরের নামাজ পড়া উত্তম । কিন্তু কোন কারণে যদি কিছু তারাবীহ পড়ার পূর্বে অথবা সমস্ত তারাবীহ পড়ার পূর্বে বেতেরের নামাজ পড়াও জায়েজ হবে।

০৩।    যদি কোন মুক্তাদির বিলম্বে নামাজে যোগ দেবার করণে তার কিছু তারাবীহ বাকী থাকতে ঈমাম বেতেরের নামাজের জন্য দাঁড়ালেন, এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির উচিৎ হবে ঈমামের সাথে বেতেরের নামাজ পড়া এবং তারপর বাদ পড়া তারাবীহ পড়া।

০৪।    চার রাকায়াত পড়ার পর এত সময় পর্যন্ত বিশ্রাম নেয়া মুস্তাহাব যত সময়ে চার রাকায়াত পরা হয়েছে।

০৫।    যদি এশার ফরজ না পড়ে তারাবীতে শরীক হয় তাহলে তার তারাবী দুরস্ত হবে না ।

০৬।    যদি কেউ এশার ফরজ জামায়াতে পড়ল এবং তারাবীহ জামায়াতে পড়ল না, সে-ও বেতেরের নামাজ জামায়াতে পড়তে পারে।

০৭।    যদি কেউ এশার ফরজ জামায়াতে পড়ল না সে তারাবীহ ও বেতেরের নামাজ জামায়াতে পড়তে পারবে।

০৮।    বিনা কারণে বসে বসে তারাবীহ নামাজ পড়া মাকরূহ ।

০৯।    ফরজ ও বেতের এক ঈমাম এবং তারাবীহ অন্য ঈমাম পড়াতে পারে।

১০।    তারাবীহ দ্বিতীয় রাকায়াতে বসার পরিবর্তে ঈমাম দাঁড়িয়ে গেল, যদি তৃ্তীয় রাকায়াতে সিজদার পূর্বে তার মনে পড়ে যায় অথবে কোন মুক্তাদি মনে করিয়ে দেয় তাহলে ঈমামের উচিত বসে যাওয়া এবং তাশাহুদ পড়ে এক সালাম ফিরিয়ে সিজদায় সাহু দেবে, তারপর নামাজ পুরা করে সালাম ফেরাবে। তাতে দু’রাকায়াত সহীহ হবে। আর যদি তৃ্তীয় রাকায়াতের সিজদা করার পর মনে পড়ে তাহলে এক রাকায়াতের সাথে মিলিয়ে চার রাকায়াত পুরা করবে।

১১।    যারা এশার নামাজ জামায়াতে পড়েনি, তাদের জন্য তারাবীহ জামায়াতে পড়া দুরস্ত নয়।

১২।    কেউ যদি মসজিদে এমন সমইয়ে পৌছে যখন এশার ফরজ হয়ে গেছে, তাহলে প্রথমে সে এশার ফরজ পড়বে এবং পরে তারাবীতে শরীক হবে। তারাবি’র যে সব রাকায়াত বাদ যাবে সেগুলো হয় বিরতির সময় পড়ে নেবে অথবে জামায়াতে বেতের পড়ার পর পড়ে নেবে।

১৩। তারাবীতে কুরআন পড়ার নিয়ম হলো, কোন সূরায় বিসমিল্লাহ উচ্চস্বরে পড়তে হবে। পুরা কুরআন পাঠকারীকে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে এবং শ্রবণকারীকে শুনতে হবে। এজন্য হাফেজকে উচ্চস্বরে পড়তে হবে।

১৪।    কেউ কেউ তারাবীহতে তিনবার ক্কুলহু আল্লাহ পড়ে। তা পড়া মাকরূহ ।

১৫।    কুরআন খতম করার পর সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় কুরআন শুরু করা সুন্নাত। রাসূল (সাঃ) বলেন, আল্লাহ এ কাজ পছন্দ করেন যে কেউ কুরআন খতম করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রথম থেকে আবার শুরু করে ............মুফলিহুন” পর্যন্ত পড়বে।

তারাবীর সময় বেতেরের নামাজের জামায়াতঃশুধু রমজান মাসে বেতেরের নামাজ জামায়াতে পড়া প্রমাণিত আছে। রমজান মাস ছাড়া অন্য মাসে বেতের জামাতে পড়া জায়েজ নেই। যারা একাকী তারাবীহ নামাজ পড়ল তারাও জামায়াতে বেতের পড়তে পারে। কিন্তু যারা তারাবী জামায়াতে পড়ল তাদে জন্য বেতের জামায়াতে পড়া দরকার। বেতের নামাজ তারাবীর পরে অথবা আগে পড়া যায়।

তারাবীহ নামাজে কুরআন খতমঃপবিত্র রমজান মাসে একবার কুরআন ক্রমানুসারে খতম করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। (ইলমুল ফিকাহ)
রাসূল (সাঃ) প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল (আঃ) কে পুরা কুরআন শরীফ শুনাতেন। যে বছর তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নেন, সে বছর তিনি জিবরাইল (আঃ) কে দু’বার কুরআন শুনিয়েছেন।

Comments

Post a Comment

Thanks for comments

Popular posts from this blog

ইমাম আবু হানিফার নামে মিথ্যা বানোয়াট প্রতারণা

পীর কাকে বলে হাক্কানী পীর বনাম ভন্ড পীর

মুসলিম মাযহাব ছাডবে কেন